The Home of Technology

Select your Language

| | | | | | | Blogger Tips And Tricks|Latest Tips For BloggersFree BacklinksBlogger Tips And Tricks | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | | |

Thursday, January 15, 2015

ফেসবুকিং অথবা ইন্টারনেটে ব্রাউজিং? ভালো, কিন্তু...

একটি ছেলে অথবা মেয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে, এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে তার মুঠোফোনের স্ক্রিনের দিকে, কখনো আঙুল চালাচ্ছে কি-প্যাডে, কখনো বা আপন মনেই হেসে উঠছে- এ সবই আজকালকার দিনের খুব সাধারণ দৃশ্য। রাস্তাঘাটে বের হলে এমন দৃশ্য তো হরদমই চোখে পড়ে। আর শুধু বাইরের কথাই বা বলছি কেন? ঘরের ভেতরেও তো দিন-রাত একই কাহিনী চলছে। আগে যেখানে একদল মানুষ একসাথে হলে সারাক্ষণ গল্প-গুজবে মেতে থাকতো এখন সেখানে কিছুক্ষণ কথাবার্তার পরই সবাই মুঠোফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সবই আধুনিক প্রযুক্তির সুফল অথবা কুফল।



বর্তমান সময়ে একজন মানুষ প্রতিদিন গড়ে চার ঘন্টা মুখ গুঁজে পড়ে থাকে মুঠোফোন-ল্যাপটপের স্ক্রিনে, বইয়ের পাতার মাঝে, বছরে প্রায় ১৪৬০ ঘন্টা। কিন্তু কখনো চিন্তা করে দেখেছেন কি সামান্য এই মাথা নিচু করে তাকাতে আমাদের শরীরের উপর কি পরিমাণ চাপ পড়ে?

কিছুদিন আগে Surgical Technology International জার্নালে নিউ ইয়র্কের ব্যাক সার্জন (Back Surgeon) কেনেথ হ্যান্সরাজ মানুষের মেরুদণ্ডের কম্পিউটার মডেলের সাহায্যে এমনই একটি হিসাব প্রকাশ করেছেন।



হ্যান্সরাজ দেখিয়েছেন যে আমরা যখন ফেসবুক ব্যবহার করি, মোবাইলে এসএমএস আদান-প্রদান করি কিংবা অন্যান্য কাজে ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকি (০ ডিগ্রি কোণ) তখন আমাদের মাথায় যে ওজন পড়ে তা প্রায় ১২ পাউন্ডের সমান। 
সামনের দিকে মাথা ঝোঁকানোর মাত্রা যত বাড়তে থাকে, ঘাড়ের উপর চাপ ততই বাড়তে থাকে। মাথা যখন ঝুঁকে থাকে ১৫ ডিগ্রি ওজন তখন ২৭ পাউন্ডের মতো, ৩০ ডিগ্রির সময় ৪০ পাউন্ড। এভাবে আমাদের স্বাভাবিক যে অবস্থা হয় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের সময় (৬০ ডিগ্রি) তাতে প্রায় ৬০ পাউন্ডের মতো ওজন আমাদের ঘাড়ের ওপর পড়ে! 
তুলনা করতে চান? এই ওজন প্রায় চারটি বোলিং বল অথবা আট বছর বয়সী কোনো বাচ্চার গড় ওজনের সমান। চিন্তা করা যায়? আপনি যখন মাথাটা ঝুঁকিয়ে ফেসবুকে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তখন একটা বাচ্চা আপনার ঘাড়ের উপর বসে মনের আনন্দে আপনাকে ঘোড়া বানিয়ে খেলছে!





এই ক্রমবর্ধমান চাপ যে আমাদের দেহের জন্য মোটেও ভালো নয় তা বোধহয় না বললেও চলে। হ্যান্সরাজের মতে এই চাপ আমাদের নানা ধরণের স্নায়বিক দুর্বলতা থেকে শুরু করে পরবর্তীতে চিকিৎসকের ছুরি-কাঁচির নিচে যাবার কারণ পর্যন্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে! 

এখন কি তাহলে মোবাইল-ল্যাপটপ ফেলে দিয়ে দিন-রাত মূর্তির মতো বসে থাকতে হবে?

এ ব্যাপারে মাসক্যুলোস্কেলেটাল (Musculoskeletal) ফিজিওথেরাপিস্ট টামের সাবেট বলেন, শুধুমাত্র মোবাইল ফোন ব্যবহারকেই ঘাড় ব্যাথার জন্য দায়ী করা ঠিক হবে না। এর পেছনে একইসাথে বয়স, লিঙ্গ, পেশার ধরণ, পেশাগত চাপ, পেশাগত ভিন্নতা এবং নানা ধরণের সাইকো-স্যোশাল ফ্যাক্টর জড়িত আছে। শুধু মোবাইল ফোনের কথা বললে আসলে বাকিগুলোর অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয়।
তার মতে, হ্যান্সরাজের হিসাবটি কেবলই একটি গাণিতিক মডেল যার রয়েছে বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা। তাই একে আদর্শ হিসেবে মেনে নেয়ার আগে ব্যাপারটি নিয়ে বিস্তর গবেষণা প্রয়োজন আছে বলেই তিনি অভিমত দিয়েছেন। 

অনেক হলো ,ঘাড় থেকে আট বছর বয়সী বাচ্চাটাকে এবার নামানো দরকার। অনেকক্ষণ ধরেই বসে আছে সে। তবে একটু সাবধান থাকলেই কি ভালো না?

তথ্যসুত্রঃ
(১) http://www.smh.com.au
(২) http://www.theatlantic.com
(৩) http://www.sciencealert.com